ক) তৎপুরুষ সমাস
খ) বহুব্রীহি সমাস
গ) কর্মধারয় সমাস
ঘ) দ্বিগু সমাস
🔎 সঠিক উত্তর: গ) কর্মধারয় সমাস
📘 ব্যাখ্যা :
“বিশালাক্ষী” শব্দটি গঠিত হয়েছে “বিশাল” + “অক্ষী” — এই দুটি পদ থেকে।
“বিশাল” অর্থ — বড় বা বিস্তৃত,
“অক্ষী” অর্থ — চোখ।
এই দুটি পদের সমন্বয়ে “বিশালাক্ষী” অর্থ দাঁড়ায় — যার চোখ বিশাল বা বড়, অর্থাৎ বিশালচক্ষু বিশিষ্ট নারী। দেবী দুর্গার এক রূপকেও “বিশালাক্ষী” বলা হয়।
এই শব্দে “বিশাল” পদটি পরের পদ “অক্ষী”-র গুণ বা ধর্ম নির্দেশ করছে। অর্থাৎ, এটি বলছে — চোখ কেমন? বিশাল। তাই, এখানে পূর্বপদ (বিশাল) পরবর্তী পদের (অক্ষী) গুণ প্রকাশ করছে।
এই ধরনের শব্দ গঠনের পদ্ধতিকে কর্মধারয় সমাস বলে। কর্মধারয় সমাসে পূর্বপদ সাধারণত বিশেষণ হয় এবং পরবর্তী বিশেষ্য পদটির গুণ বা ধর্ম প্রকাশ করে। তাই, “বিশালাক্ষী” হলো কর্মধারয় সমাসের নিখুঁত উদাহরণ।
✍️ ভূমিকা:
বাংলা ভাষায় সমাস হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাকরণিক কাঠামো, যার মাধ্যমে একাধিক শব্দ সংক্ষিপ্ত হয়ে একটি নতুন অর্থবোধক শব্দ তৈরি করে। সমাস বাক্য গঠনকে আরও সংক্ষিপ্ত, মাধুর্যপূর্ণ এবং বোধগম্য করে তোলে। কর্মধারয় সমাস এমন এক প্রকার সমাস, যেখানে পূর্বপদ দ্বিতীয় পদের গুণ, ধর্ম বা অবস্থা নির্দেশ করে। “বিশালাক্ষী” শব্দটি এই সমাসের একটি উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। এটি কেবল ভাষাগত দিক থেকেই নয়, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই শব্দটি হিন্দু ধর্মে দেবী দুর্গার বিশেষ রূপ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
✅ উপসংহার:
সবদিক বিবেচনায় বলা যায়, “বিশালাক্ষী” শব্দটি কর্মধারয় সমাসের একটি চমৎকার উদাহরণ। এটি ভাষার সৌন্দর্য ও ব্যাকরণিক গঠনশৈলীর প্রকাশ ঘটায়। কর্মধারয় সমাসে যে পদ্ধতিতে একটি বিশেষণ ও একটি বিশেষ্য মিলিয়ে একটি অর্থবোধক শব্দ তৈরি হয়, তা বাংলা ভাষাকে আরও প্রাঞ্জল ও অর্থবহ করে তোলে। “বিশালাক্ষী”-এর মতো শব্দসমূহ সাহিত্য, ধর্মীয় গ্রন্থ ও কবিতায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, যা আমাদের ভাষার ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্য তুলে ধরে।