Home » Grammar » মকরমুখো কোন সমাস

মকরমুখো কোন সমাস

ক) তৎপুরুষ সমাস
খ) বহুব্রীহি সমাস
গ) কর্মধারয় সমাস
ঘ) দ্বন্দ্ব সমাস

🔎 সঠিক উত্তর: গ) কর্মধারয় সমাস

📘 ব্যাখ্যা :

“মকরমুখো” শব্দটি গঠিত হয়েছে “মকর” + “মুখ” + “ও” (প্রত্যয়) — এই তিনটি অংশ থেকে।

“মকর” অর্থ কুমীর বা সামুদ্রিক জন্তু,

“মুখ” অর্থ মুখ বা মুখাবয়ব,

“ও” প্রত্যয়টি দ্বারা গঠিত হয়েছে একটি বিশেষণরূপ শব্দ।

“মকরমুখো” শব্দের অর্থ দাঁড়ায় — যার মুখ মকরের মতো, অর্থাৎ মকরসদৃশ মুখবিশিষ্ট ব্যক্তি বা বস্তু। উদাহরণস্বরূপ, হিন্দু ধর্মে দেবতা বরুণের বাহনকে “মকরমুখো” বলা হয় — যার মুখ মকরের মতো আকৃতির।

এখানে “মকর” শব্দটি “মুখ”-এর গুণ বা রূপ বোঝাচ্ছে। আবার “মুখো” নির্দেশ করছে এটি একটি বিশেষণ, যা কোনো বস্তুর বা প্রাণীর বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করছে।
এই ধরনের শব্দগঠনে যেখানে প্রথম পদ দ্বিতীয় পদের গুণ বা ধর্ম নির্দেশ করে, তাকে কর্মধারয় সমাস বলে।

সুতরাং, “মকরমুখো” হলো কর্মধারয় সমাসের একটি স্পষ্ট উদাহরণ।

✍️ ভূমিকা:

সমাস বাংলা ভাষার ব্যাকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা শব্দ গঠনকে সংক্ষিপ্ত, অর্থপূর্ণ ও প্রাঞ্জল করে তোলে। সমাসের বিভিন্ন প্রকারের মধ্যে কর্মধারয় সমাস অন্যতম, যেখানে প্রথম পদটি দ্বিতীয় পদের গুণ বা ধর্ম নির্দেশ করে এবং ফলস্বরূপ একটি নতুন অর্থবোধক বিশেষণ বা বিশেষ্য পদ গঠিত হয়। “মকরমুখো” শব্দটি এই সমাসের প্রকৃতি বোঝাতে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভাষার সৌন্দর্য এবং বিশ্লেষণধর্মী গঠনপদ্ধতির এক চমৎকার নিদর্শন।

✅ উপসংহার:

সবশেষে বলা যায়, “মকরমুখো” শব্দটি একটি কর্মধারয় সমাস যা বাংলা ভাষার গঠনগত শৈল্পিকতা ও বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে। এই ধরনের সমাসে আমরা দেখতে পাই কীভাবে দুটি ভিন্ন শব্দ মিলেও একটি সম্পূর্ণ নতুন অর্থ সৃষ্টি করতে পারে। “মকরমুখো”-এর মতো শব্দ বাংলা সাহিত্যে, পুরাণে ও ধর্মীয় রচনায় বহুল ব্যবহৃত এবং ব্যাকরণিক বিশ্লেষণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমাসের সঠিক চর্চা ও প্রয়োগের মাধ্যমে আমাদের ভাষাজ্ঞান যেমন দৃঢ় হয়, তেমনি শব্দভাণ্ডারও সমৃদ্ধ হয়।

Leave a Comment