ক) তৎসম শব্দ
খ) তদ্ভব শব্দ
গ) দেশজ শব্দ
ঘ) বিদেশি (বিদেশমূলক) শব্দ
✅ সঠিক উত্তর: গ) দেশজ শব্দ
📘 ব্যাখ্যা :
“খোকা” বাংলা ভাষার একটি দেশজ শব্দ। দেশজ শব্দ বলতে সেইসব শব্দকে বোঝানো হয়, যেগুলো বাংলা ভাষার আদিকাল থেকে স্থানীয়ভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং অন্য কোনো ভাষা থেকে গৃহীত নয়। “খোকা” শব্দটির অর্থ হচ্ছে “ছোট ছেলে” বা “শিশু পুত্র”। এটি সাধারণত স্নেহসূচক ও আবেগঘনভাবে ব্যবহৃত হয়।
বাংলা ভাষায় “খোকা” শব্দটির ব্যবহার দৈনন্দিন পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে অত্যন্ত সাধারণ ও আবেগপূর্ণ। শিশুর প্রতি ভালোবাসা, স্নেহ এবং মমতার প্রকাশ হিসেবে এটি প্রয়োগ করা হয়। যেমন বলা হয়—“আমার খোকা খুব দুষ্টু”, “খোকা স্কুলে যায়” ইত্যাদি। আবার সাহিত্যে ও লোকগানে “খোকা” শব্দটি নানা আবেগ প্রকাশে ব্যবহৃত হয়েছে, যেমন “আমার সোনার খোকা”।
এই শব্দটির নারীবাচক রূপ “খুকি”, যার অর্থ “ছোট মেয়ে”। “খোকা” ও “খুকি”—দুইটি শব্দই গ্রামীণ সমাজ থেকে উঠে এসেছে এবং আজও শহর ও গ্রামে সমানভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর কোনো সংস্কৃত বা বিদেশি উৎস নেই, যা এটিকে খাঁটি দেশজ শব্দ হিসেবে চিহ্নিত করে।
✍️ ভূমিকা :
বাংলা ভাষার শব্দভান্ডার গঠনে দেশজ শব্দের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এগুলো বাংলা ভাষার নিজস্ব সংস্কৃতি, আবেগ ও চেতনার পরিচায়ক। “খোকা” এমনই একটি দেশজ শব্দ, যা প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার গ্রামীণ ও নগরজীবনে সমানভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই শব্দে মাতৃত্ব, পিতৃত্ব ও পারিবারিক স্নেহের উষ্ণতা মিশে থাকে। বাংলা সাহিত্যে এমনকি গানেও “খোকা” শব্দটি শিশু চরিত্র বা আবেগঘন দৃশ্য প্রকাশে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, যা এর সাংস্কৃতিক মূল্য আরও বাড়িয়ে তোলে।
🏁 উপসংহার :
“খোকা” একটি নিখাদ দেশজ শব্দ, যা বাংলা ভাষার আবেগ, সংস্কৃতি ও পারিবারিক বন্ধনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। এর ব্যবহার বাংলা ভাষার সহজাত অনুভূতির পরিচয় বহন করে এবং ভাষার প্রাচীন ঐতিহ্যকে আজও জীবন্ত রাখে।