ক. ফারসি
খ. তুর্কি
গ. আরবি
ঘ. সংস্কৃত
সঠিক উত্তর: ক. ফারসি
🖋️ ব্যাখ্যা :
“মোগলাই” শব্দটি মূলত একটি রন্ধনসংক্রান্ত শব্দ, যা বাংলা ভাষায় বহুল ব্যবহৃত। এটি সাধারণত বিশেষ ধরনের মশলাদার ও সমৃদ্ধ খাবার বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, যেমন: মোগলাই পরোটা, মোগলাই কাবাব, কোর্মা, রেজালা ইত্যাদি। এই খাবারগুলো মূলত মুঘল শাসকদের আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। “মোগলাই” শব্দটি এসেছে “মোগল” থেকে, আর “মোগল” শব্দটির উৎস ফারসি ভাষায়। মুঘলরা ফারসি ভাষাকে তাদের দরবারি ভাষা হিসেবে ব্যবহার করতেন, এবং তাদের সংস্কৃতির অনেক দিক—including খাবার—ফারসি ভাষার মাধ্যমে উপমহাদেশে বিস্তার লাভ করে। “মোগলাই” বলতে মূলত মুঘলদের রীতিতে তৈরি রাজকীয় ও মশলাদার খাবার বোঝানো হয়। বাংলা ভাষা সেই সময় ফারসি ভাষার ব্যাপক প্রভাবের আওতায় আসে এবং “মোগলাই” শব্দটিও তখন থেকেই বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয়।
🌿 ভূমিকা:
ভাষা ও সংস্কৃতি একে অপরের সঙ্গে জড়িত। যে সমাজে নতুন সংস্কৃতি প্রবেশ করে, সেখানে তার ভাষাও প্রভাব ফেলে। ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে বাংলা ভাষা বহু বিদেশি ভাষার সংস্পর্শে এসেছে—বিশেষ করে শাসন ও ধর্মীয় প্রভাবে। সেই প্রভাবে ফারসি, আরবি, তুর্কি ভাষা থেকে বহু শব্দ বাংলায় ঢুকে পড়েছে। “মোগলাই” হলো এমনই একটি শব্দ, যার সঙ্গে ইতিহাস, রাজনীতি ও রন্ধনশিল্প গভীরভাবে জড়িত।
🎯 সঠিক উত্তর চেনার উপায়:
“মোগলাই” শব্দটি বুঝতে হলে এর সঙ্গে জড়িত ঐতিহাসিক পটভূমি জানতে হবে। শব্দটির উৎস মুঘল সাম্রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত, যাদের দরবারি ভাষা ছিল ফারসি। মোগলাই খাবারের বৈশিষ্ট্যও রাজকীয় এবং ফারসি-তুর্কি রন্ধনরীতির সমন্বয়। তাই যেসব ভাষা মুঘলদের শাসনকালে বেশি ব্যবহৃত হতো, তার মধ্যেই সঠিক উৎস লুকিয়ে রয়েছে। শব্দের গঠন ও ব্যবহার বিচার করেও এর উৎস অনুমান করা যায়।
✅ উপসংহার:
“মোগলাই” শুধু একটি খাবারের নাম নয়—এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভাষার মেলবন্ধনের প্রতীক। মুঘলদের শাসন ও ফারসি ভাষার প্রভাব বাংলা ভাষায় এমনভাবে মিশে গেছে যে অনেক শব্দ আজ আমাদের নিজস্ব বলে মনে হয়। এই শব্দগুলোর উৎস জানলে আমরা ভাষার পাশাপাশি ইতিহাসকেও নতুন করে চিনতে পারি।