ক. ফারসি
খ. আরবি
গ. পর্তুগিজ
ঘ. সংস্কৃত
✅ সঠিক উত্তর: গ. পর্তুগিজ
✍️ ব্যাখ্যা :
“ডাব” শব্দটি বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত একটি প্রচলিত শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে অপরিপক্ব নারকেল বা কাঁচা নারকেল। এটি আমাদের দেশে খুব পরিচিত একটি ফলের নাম। তবে এই সাধারণ ও দৈনন্দিন ব্যবহৃত শব্দটির উৎস মূলত পর্তুগিজ ভাষা। পর্তুগিজ ভাষায় “ডাবো” (d’água বা coco d’água) অর্থাৎ “জলের নারকেল”, যা পরবর্তীতে বাংলায় রূপ নেয় “ডাব” শব্দে।
বাংলাদেশে ও পশ্চিমবঙ্গে পর্তুগিজদের আগমন ঘটে ১৬শ শতকে। মূলত উপকূলীয় অঞ্চল ও বন্দরনগরীতে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করে। তাদের সঙ্গে অনেক পর্তুগিজ শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করে। “ডাব” শব্দটি তেমনই একটি উদাহরণ।
নারকেল গাছ উপকূলীয় অঞ্চলে প্রচুর জন্মায়, আর সেই কারণে পর্তুগিজরা এই ফলটির নাম তাদের ভাষা অনুযায়ী ব্যবহার করত। বাংলা ভাষায় এই শব্দটি সহজ ও ব্যবহারিক হওয়ায় তা দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যদিও অনেকেই মনে করেন এটি দেশি শব্দ, প্রকৃতপক্ষে এটি একটি গৃহীত বিদেশি শব্দ।
বর্তমানে “ডাব” শব্দটি এমনভাবে বাংলা ভাষায় রপ্ত হয়েছে যে এর বিদেশি উৎস অধিকাংশ মানুষের অজানা। তবে ভাষা বিশ্লেষণ ও শব্দ-ইতিহাসের দিকে নজর দিলে এর পর্তুগিজ উৎস স্পষ্ট হয়।
📚 ভূমিকা:
বাংলা ভাষা একটি সংমিশ্রণধর্মী ভাষা, যেখানে নানা দেশের উপনিবেশ, বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের প্রভাব রয়েছে। ইংরেজি, ফারসি, আরবি, পর্তুগিজসহ বিভিন্ন ভাষা থেকে অনেক শব্দ বাংলায় এসেছে ও গৃহীত হয়েছে। “ডাব” শব্দটি সেই রকমই একটি শব্দ, যার শিকড় পর্তুগিজ ভাষায়।
🔍 সঠিক উত্তর চেনার উপায়:
“ডাব” শব্দটি ভারতীয় উপমহাদেশের স্থানীয় হলেও শব্দটি দেশি নয়।
পর্তুগিজ ভাষায় “d’água” মানে “জলের নারকেল”।
তারা উপকূলীয় অঞ্চলে নারকেলকে এভাবেই চিনতো।
বাংলা “ডাব” শব্দটি সেই পর্তুগিজ উচ্চারণ থেকেই এসেছে।
তাই শব্দটির উচ্চারণ এবং প্রাচীন বন্দর অঞ্চলগুলোর ইতিহাস দেখলেই বোঝা যায়, এটি পর্তুগিজ ভাষা থেকে আগত।
✅ উপসংহার:
“ডাব” শব্দটি যতই বাংলা মনে হোক, এর উৎস যে বিদেশি—তা ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণেই ধরা পড়ে। পর্তুগিজদের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের ফলে এই শব্দটি বাংলায় এসেছে এবং পরবর্তীতে তা এতটাই মিশে গেছে যে এখন তা পুরোপুরি বাংলা বলেই ধরে নেওয়া হয়। ভাষার ইতিহাস জানলে শব্দের প্রকৃত উৎস ও রূপান্তর বুঝতে সুবিধা হয়।